রানটা একটু কমই করে ফেলেছে চিটাগং কিংস। নইলে সেঞ্চুরিটা পেতেই পারতেন তানজিদ হাসান। চিটাগং কিংসের তোলা ১৪৮ রান ঢাকা ক্যাপিটালস ২ উইকেট হারিয়ে ১১ বল বাকি থাকতেই টপকে গেছে। বড় জয়ে ঢাকার আক্ষেপের কোনো জায়গা থাকলে সেটি তানজিদকে নিয়ে। বাঁহাতি এ ওপেনার মাঠ ছেড়েছেন ৯০ রানে অপরাজিত থেকে। চিটাগংয়ের রান আর ১০ বেশি হলেই যে সেঞ্চুরিটা হয়ে যায় তানজিদের!
তবে ২৪ বছর বয়সী এই ব্যাটসম্যান জানিয়েছেন, তিন অঙ্ক মিস হলেও যা করতে পেরেছেন, তাতেই সন্তুষ্ট। আবার সেঞ্চুরি না হলেও ছক্কায় যে রেকর্ড গড়েছেন, সেটিকেও খুব বড় করে দেখতে চান না।
আজ চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে তানজিদ যে ইনিংস খেলেছেন, সেটি এবারের আসরে তাঁর চতুর্থ পঞ্চাশ+, যার মধ্যে সিলেটে দুর্বার রাজশাহীর বিপক্ষে ১০৮ রানের ইনিংসও আছে। সেটি ছিল বিপিএলে তানজিদের দ্বিতীয় সেঞ্চুরি। বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের মধ্যে বিপিএলে দুটি সেঞ্চুরি আছে আর একজনের — তামিম ইকবাল।
আজ তানজিদ যদি ৫৪ বলে ৯০ রানের ইনিংসটিকে সেঞ্চুরি পর্যন্ত নিয়ে যেতে পারতেন, তাহলে প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে বিপিএলে সর্বোচ্চ ৩ সেঞ্চুরির মালিক হয়ে যেতেন। সেটি না হলেও অবশ্য আক্ষেপ নেই তানজিদের। ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে জিজ্ঞাসা করা হলে এই ওপেনার বলেন, ‘যা হয়েছে, আলহামদুলিল্লাহ। হয়তো-বা হতেও পারত, এটা (সেঞ্চুরিটা) আমার হাতে নেই। তবে খেলাটা শেষ করতে পেরেছি, এটা নিজের কাছে ভালো লেগেছে।’
আজ রানতাড়ায় লিটন দাসের সঙ্গে তানজিদের উদ্বোধনী জুটিতেই উঠেছিল ৭৫ রান। লিটন ২৫ রান করে আউট হয়ে গেলেও তানজিদ টিকে ছিলেন শেষ পর্যন্ত। শুরুতে দেখেশুনে খেলার (প্রথম ১২ বলে ১৬ রান) প্রসঙ্গ তুলে তানজিদ বলেন, ‘চেষ্টা করছিলাম নিজেকে সময় দেওয়ার। বল একটু লেট করে আসছিল। তবে আমি চিন্তা করছিলাম, যদি নিজেকে সময় দিই, তাহলে আমি মোটামুটি রানটা কাভার করতে পারব। এই পরিকল্পনায়ই এগিয়েছি, নিজেকে একটু সময় দিয়েছি, ভালো বল দেখে খেলেছি আর বাজে বল মেরেছি।’
তানজিদ আজকের ইনিংসে ছক্কা মেরেছেন ৭টি, যা এবারের আসরে তাঁর ছক্কার সংখ্যা ২৯-এ নিয়ে গেছে। বিপিএলের কোনো আসরে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের মধ্যে এটি সর্বোচ্চ। সামনে শুধু ক্রিস গেইলের ২০১৭-১৮ মৌসুমে মারা ৪৭ ছক্কা। লিগ পর্বে আরও দুটি ম্যাচ বাকি থাকায় এবং তানজিদ যে ফর্মে আছেন, তাতে গেইলকে পেছনে ফেলা অসম্ভবও নয়। তবে ছক্কার রেকর্ড নিয়ে ভাবছেন না তানজিদ, ‘আমি কখনই এভাবে চিন্তা করিনি। আমাদের সামনে আছে আর দুইটা ম্যাচ, সেগুলো কীভাবে ভালোভাবে শেষ করতে পারব, সেটাই পরিকল্পনায় রয়েছে। আমরা সবাই সেভাবেই চিন্তা করছি। যদি এর মধ্যে হয়ে যায় (রেকর্ড), হয়ে যাবে। তবে আমি স্বাভাবিকভাবে যে পরিকল্পনায় খেলি, সেভাবেই খেলার চেষ্টা করব।’
বিপিএলে দৃষ্টিকটু ওয়াইডের ঘটনায় ফিক্সিংয়ের যে গুঞ্জন চলছে, এ নিয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে জাতীয় দলের এ ওপেনার বলেন, ‘না, (এমন মনে হয়নি)। ওয়াইড বল খেলারই একটা অংশ, এটা হতেই পারে। আমি কখনো এভাবে (পাতানো ম্যাচ) দেখিনি, কারণ ওয়াইড হতেই পারে। আমি এই বিষয়ে আর কোনো মন্তব্য করতে চাইছি না। কারণ, এটা খেলারই অংশ।’